বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম |
মহান আউলিয়া হযরত পীর খান জাহান আলীর (রহঃ) স্মৃতি বিজড়িত বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নে এই সবুজ শ্যামল প্রান্তরে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী হিন্দু-মুসলমানদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আজ থেকে প্রায় ৫৪ বছর পূর্বে গজালিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় | বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে অদ্যাবধি অনেক জ্ঞানী-গুনী লোক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে দেশ ও দেশের বাইরে সুনামের সাথে কর্মরত আছেন | স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) প্রসারের লক্ষ্যে গজালিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ওয়েব সাইট চালু হতে যাচ্ছে | এটা বর্তমান সরকারের তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি (ICT) বিভাগের উল্লেখযোগ্য সফলতা | পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সব তথ্য জানা যাবে | একটি জাতির আসল পরিচয় ঘটে তার সুশিক্ষা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে | প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গজালিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এই ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে | বিদ্যালয়ের সুযোগ্য শিক্ষকমণ্ডলী যুগোপযোগী ও দক্ষতামূলক পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের প্রচেষ্টা চালু রেখেছেন | বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সুচিন্তিত নির্দেশনায় বিদ্যালয়ে সর্বদা শৃঙ্খলা ও শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত হচ্ছে |
বিদ্যালয়ের সুনাম ও সাফল্যের ধারা চালু এবং ঐতিহ্যের পতাকা সমুন্নত রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি রইলো নিবেদন | গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর উন্নয়নের ধারায় অত্র বিদ্যালয়ের অবদান ও অংশগ্রহণ জারি রাখতে বিদ্যালয়ের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করছি ।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
মোঃ কামরুল ইসলাম
সভাপতি, (ম্যানেজিং কমিটি )
গজালিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
এ স্কুলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপরিকল্পিত পাঠ্যক্রম, সহ–পাঠ্যক্রম কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক গুণাবলীর সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সাধন যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে উপযুক্ত নেতৃত্ব দিতে পারে। অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে এ প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে অভিজ্ঞ, প্রশিক্ষিত ও নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকমন্ডলী, অত্যাধুনিক পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ল্যাব ও ব্যবহারিক ক্লাস এবং অত্যাধুনিকস্মার্ট ক্লাস রুম। । এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে আধুনিক তথ্য ও বইসমৃদ্ধ লাইব্রেরি; যেখানে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বই।প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিমুক্ত এবং প্রকৃতিগতভাবে সাবলীল একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান।
হযরত খাজা খানজাহান আলী (রহঃ)-পূণ্য স্মৃতি বিজড়িত বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার অন্তর্গত গজালিয়া ইউনিয়নের বলেশ্বরের পলিরেণু বিধৌত নদী তীরে গজালিয়া গ্রামের প্রাণকেন্দ্রে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। স্থানীয় কিছুসংখ্যক বিদ্যেৎসাহী জনসাধারণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হলেও স্বাধীনতাত্তোরকালে বাগেরহাট ২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মীর সাখাওয়াত আলী দারু মহোদয়ের সক্রিয় সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি ১৯৮৫ সালে এমপিওভূক্ত হয়।
এ বিদ্যালয়টি ৭৮ শতক জায়গার উপরে ৩টি পাঁকাভবন বিশিষ্ট। এতে ১৪টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৯টি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা হয়। বাকি কক্ষগুলোর ভেতর একটি প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, একটি সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কক্ষ, একটি কম্পিউটার ল্যাবরেটরী, একটি সমৃদ্ধ বিজ্ঞানাগার ও একটি পাঠাগার রয়েছে। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র-চেয়ার,টেবিল,বেঞ্চ, ব্লাকবোর্ড ছাড়াও প্রতিটি কক্ষে রয়েছে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা।
এই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় চারশো এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৩ জন, সহকারী গ্রন্থাগারিক ১ জন, ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী ২ জন এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ৪ জন। অত্যন্ত স্নেহময় পরিবেশে নিরাপত্তাবেষ্টনীর আবর্তে সুন্দর ও সুশৃংখল পরিবেশে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এই বিদ্যালয়ে নিয়মিত খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সুপরিসর মাঠে ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল এবং অন্যান্য খেলাধূলা নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে জাতীয় দিবসগুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। এর মধ্যে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া প্রতিবছর বার্ষিক পরীক্ষার পরে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ মিলে বার্ষিক বনভোজন এবং শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়।
বিদ্যালয়টির ফলাফল বরাবরই সন্তোষজনক। প্রতি বছরই জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৯০%+। জেএসসি পরীক্ষায় প্রতিবছরই ধারাবাহিকভাবে কিছু শিক্ষার্থী সরকারি বৃত্তি লাভ করে। এসএসসি পরীক্ষায়ও ধারাবাহিকভাবে জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে মাননীয় সরকারের প্রস্তাবিত কর্মসূচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গ্র“পভিত্তিক কম্পিউটার প্রশিক্ষন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
বিদ্যালয়ের অনন্য বেশিষ্ট্য হলো লেখাপড়ার সুষ্ঠ পরিবেশ, উপযুক্ত খেলার মাঠ, শিক্ষকবৃন্দের আন্তরিক প্রচেষ্টা, মনোরম শ্রেণিকক্ষে পাঠদান এবং চারপাশে মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ। বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রমের জন্য অন্যান্য বিদ্যালয় অপেক্ষা এই বিদ্যালয়টি স্বাতন্ত্র্যের দাবিদার। ইদানীং প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা কমিটি ও অভিভাবক কমিটির সক্রিয় সহযোগিতায় এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা মন্ডলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আলোকিত মানুষ তৈরি এবং বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দীপ্তপ্রত্যয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে।